বীজ পরিচর্যা
- বীজ পরিচর্যার সুবিধা
- যথাযথ পরিচর্যায় শুধু যে বীজ আর চারাগাছের উপকার হয়, তা-ই নয়, অঙ্কুরোদ্গমের ক্ষমতা বাড়ে, গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়।
- বীজ পরিচর্যার পদ্ধতি
- বীজ পরিচর্যা এমন একটা শব্দ, যা একই সঙ্গে পণ্য এবং প্রক্রিয়া দুই-ই বোঝায়। নীচে বর্ণিত যে কোনও একটি পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করা যেতে পারে।
- বীজ পরিচর্যা নিয়ে কিছু পরামর্শ
- বীজ পরিচর্যা
বীজ পরিচর্যার সুবিধা
বীজ পরিচর্যার সুবিধা
- মাটি ও বীজজাত জীবাণু ও পোকামাকড় থেকে অঙ্কুরিত বীজ ও চারাগাছ রক্ষা
বীজের অঙ্কুরোদ্গম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি
- দ্রুত এবং সুসংবদ্ধ বৃদ্ধি
- শুঁটি জাতীয় শস্যের দ্রুত শুঁটি বেরোনো
- মাটি ও পাতায় নজর দেওয়ার চেয়ে বীজে বেশি নজর দেওয়া সুবিধাজনক
- খারাপ পরিস্থিতিতেও (অতিরিক্ত বা কম আর্দ্রতায়) শস্যের উৎপাদনে সমতা
- বীজ ড্রেসিং--- এটা বীজ পরিচর্যার সবচেয়ে চালু পদ্ধতি। বীজকে শুকনো বা তরল মিশ্রণে অথবা থকথকে কাদার
মধ্যে রাখা হয়। বীজের সঙ্গে কীটনাশক মেশানোর জন্য সস্তা মাটির পাত্র ব্যবহার করা যায়। পলিথিন চাদরের উপর বীজ ছড়িয়ে তার উপর উপযুক্ত পরিমাণে কেমিক্যাল ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে। চাষিরা যান্ত্রিক পদ্ধতিতেও এই কাজ করতে পারেন। খামার এবং শিল্পক্ষেত্র, দু’জায়গাতেই বীজ ড্রেসিং করা হয়ে থাকে।
- বীজ আচ্ছাদন-- বীজের ক্ষমতা বাড়াতে একটি বিশেষ দ্রব্য দিয়ে তাকে আচ্ছাদিত করে রাখা হয়। এই আচ্ছাদনের জন্য উন্নত বীজ পরিচর্যা প্রযুক্তির প্রয়োজন। এই পদ্ধতি সাধারণত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
- বীজের বড়ি দেওয়া--- এটা সবচেয়ে উন্নত বীজ পরিচর্যা পদ্ধতি। এতে বীজের আকার পাল্টে যায়, স্বাদ বাড়ে এবং বীজ ব্যবহার করাও সুবিধাজনক হয়। এর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দরকার এবং এটা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি।
বীজ পরিচর্যার পদ্ধতি
বীজ পরিচর্যা এমন একটা শব্দ, যা একই সঙ্গে পণ্য এবং প্রক্রিয়া দুই-ই বোঝায়। নীচে বর্ণিত যে কোনও একটি পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করা যেতে পারে।
বীজ পরিচর্যা নিয়ে কিছু পরামর্শ
বীজ পরিচর্যা নিয়ে কিছু পরামর্শ
শস্য
|
কীট/রোগ
|
বীজ পরিচর্যা
|
মতামত
|
---|---|---|---|
আখ
|
শিকড়ে পচন, ধসা রোগ
|
কার্বেন্ডাজিম(০.১%)
২ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
৪-৬ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
|
বীজ ড্রেসিং-এর জন্যধাতব বীজ ড্রেসার /মাটির পাত্র অথবা পলিথিনব্যাগ ব্যবহার করা হয়
|
ধান
|
শিকড়ে পচন
|
ট্রাইকোডার্মা ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে (রোপণেরআগে)
|
ঐ
|
অন্যান্য পোকামাকড়
|
ক্লোরোপাইরিফস ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
| ||
ব্যাকটেরিয়া আক্রমণেশুকিয়ে যাওয়া
|
সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ০.৫% ডবলিউ পি ১০ গ্রাম,প্রতি কিলো বীজে
| ||
শিকড়ের গ্রন্থিতেনেমাটোড
|
০.২% মোনোক্রোটোফসে ৬ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রাখুন
| ||
অগ্রভাগে রোগ নেমাটোড
|
০.২% মোনোক্রোটোফসে বীজ ভিজিয়ে রাখুন
| ||
লঙ্কা
|
স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া,অ্যানথ্রাকনোস এসপিপি
|
প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে, প্রতি১০০ গ্রাম বীজে ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম
|
ঐ
|
মাটিবাহিত ছত্রাকজাতীয়সংক্রমণ
|
প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে এবংসিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে,কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউ এস, এক লিটার জলে দেড় থেকেআড়াই গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো
|
ঐ
| |
জাসিদ, আফিদ, থ্রিপস
|
ইমিডাক্লোপ্রিড ৭০ ডব্লিউএস, প্রতি কিলো বীজে ১০-১৫গ্রাম এআই
|
ঐ
| |
অড়হর
|
ধসা, শিকড়ে পচন,শুকিয়ে যাওয়া
|
প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
|
ঐ
|
মটর
|
শিকড়ে পচন
|
ব্যাসিলাস সাবটিলিস বা সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স দিয়েবীজের পরিচর্যা,
১০০ গ্রাম এফওয়াইএম-এ আড়াই থেকে ৫ গ্রাম মাটিতেপ্রয়োগ অথবা প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বাকাপ্তান প্রয়োগ
|
ঐ
|
সাদা পচন
|
প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম থিরাম+কার্বেন্ডাজিম
প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান
| ||
ঢ্যাঁড়শ
|
শিকড়ের গ্রন্থিতে রোগ
|
বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রামপ্যাসিলোমিসেস লিলাসিনাস এবং সিউডোমিনাস ফ্লুরোসেন্স
| |
টম্যাটো
|
মাটি বাহিত ছত্রাকজাতীয় রোগ বাস্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া,ধসা রোগ, শুকিয়েযাওয়া
|
১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে, কাপ্তান ৭৫ডব্লিউএস প্রতি লিটার জলে দেড় থেকে ২ গ্রাম এআইমিশিয়ে মাটি ভেজানো,
বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রামসিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং ভি ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
|
ঐ
|
ধনে
|
ধসা
|
প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে
|
ঐ
|
বেগুন
|
ব্যাকটেরিয়াজনিত ধসা
|
প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স
|
ঐ
|
শুঁটিজাতীয়শস্য |
মাটি বাহিত সংক্রমণ
|
১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
| ঐ |
নেমাটোড | কাবোর্ফুরান অথবা কার্বোসালফান ৩%(ডব্লিউ/ডব্লিউ) | ||
সূর্যমুখী
|
বীজের পচন
|
প্রতি কিলো বীজে ৬ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
|
ঐ
|
জাসিডস, হোয়াইট ফ্লাই
|
প্রতি কিলো বীজে ৫-৯ গ্রাম এআই মিডাক্লোরোপিড ৪৮এফএস,
প্রতি কিলো বীজে ৭ গ্রাম এআই ইমিডাক্লোরোপিড ৭০ডব্লিউএস
| ||
গম
|
উই
|
রোপণের আগে প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএলক্লোরোপাইরিফস বা ৭ এমএল এনডোসালফান দিয়েপরিচর্যা করতে হবে
|
ঐ
|
শিষে কালো হয়ে যাওয়া
|
থিরাম ৭৫ % ডব্লিউপি,
কার্বক্সিন ৭৫ % ডব্লিউপি,
টেবুকোনাজল ২ ডিএস প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে১.৮৭ গ্রাম এআই,
প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে ১.১৫ % ডব্লিউপি
| ||
ফুলকপি,বাঁধাকপি,ব্রকলি,মুলো
|
মাটি বা বীজ বাহিতরোগ (স্যাঁতস্যাতে হয়েযাওয়া)
|
১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে দিয়ে বীজ পরিচর্যা,
১ লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই কাপ্তান৭৫% ডব্লিউএস দিয়ে মাটি ভেজানো
|
ঐ
|
শিকড়ের গ্রন্থিতেরোগ(নেমাটোড)
|
বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রামসিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স বা ভার্লিসিলিআমক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
| ||
ছোলা
|
ধসা রোগ ও স্যাঁতস্যাতেহয়ে যাওয়া
|
প্রতি কিলো বীজে ৯ গ্রাম টি ভিরিডে ১% ডব্লিউপি দিয়েবীজ পরিচর্যা,
কার্বেন্ডাজিম ও কাবোর্সালফিন ২% মিশিয়ে বা
কার্বেন্ডাজিম, থিরাম ও কাবোর্সালফিন ২ % মিশ্রণপ্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ১৫-৩০ এমএল এআই ক্লোরোফাইরোফস২০ ইসি দিয়ে বীজ পরিচর্যা
|
ঐ
|
আলু
|
মাটি ও স্ফীতমূল বাহিতরোগ
|
এমইএমসি ৩% ডব্লিউএস ০.২৫ % বা বোরিক অ্যাসিড৩ % দিয়ে সংরক্ষণ করার ২০ মিনিট আগে পরিচর্যা
|
ঐ
|
বার্লি
|
কালো হয়ে যাওয়া, উই
|
প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই, কার্বক্সিন৭৫% ডব্লিউপি, থিরাম ৭৫% ডব্লিউপি প্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোফাইফস দিয়ে বীজপরিচর্যা
|
ঐ
|
ক্যাপসিকাম
|
শিকড়ের গ্রন্থিতেনেমাটোড
|
প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোনোমাস ফ্লুরোসেন্স ১%, ডব্লিউপি প্যাসিলোমিসেস লিলাকিরাস ও ভার্টিসিলামক্ল্যামিডেস্পোরিয়াম ১ % ডব্লিউপি বীজ ড্রেসার হিসেবেপ্রয়োগ
|
Comments
Post a Comment