চিনি, শর্করা, কার্বোহাইড্রেট গঠন, প্রোটিনসংশ্লেষ, মূল ও উদ্ভিদের অন্যান্য অঙ্গে কোষ বিভাজনের জন্য পটাসিয়াম অত্যন্ত জরুরি। জলের ভারসাম্য রক্ষা, কাণ্ডের দৃঢ়তা, ঠাণ্ডা সহ্য করা, ফল ও সবজির গন্ধ ও রঙের তীব্রতা বাড়ানো, ফলে তেলের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য পটাসিয়াম প্রয়োজনীয়। বিশেষত পাতাবহুল ফসলের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অসীম। পটাসিয়ামের অভাবে ফলন কমে যায়, পাতায় ছোপ ছোপ দাগ হয়, পাতা কুঁকড়ে যায়, পাতার ঝলসানো চেহারা হয়ে যায়।
সালফার
অ্যামিনো অ্যাসিড, প্রোটিন, ভিটামিন এবং উৎসেচকের একটি উপাদান হল সালফার। ক্লোরোফিল তৈরিতে এবং বহু সবজির গন্ধ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সালফারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সালফারের অভাবে পাতার রং হাল্কা সবুজ হয়ে যায়। অনেক সময়েই মাটি থেকে সালফার বেরিয়ে যায়। তাই সার দেওয়ার সময় আলাদা করে সালফার দিতে হয়। কোনও কোনও এলাকায় সরবরাহ করা জলে সালফার থাকে।
ম্যাগনেসিয়াম
এটি ক্লোরোফিল অণুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং কার্বোহাইড্রেট, শর্করা ও চর্বি উৎপাদনে এটি উদ্ভিদের উৎসেচকগুলিকে সহায়তা করে। ফল ও বাদাম ফলনে এটি ব্যবহৃত হয়, বীজের অঙ্কুরোদ্গমের জন্যও এটি জরুরি। ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে উদ্ভিদ পাণ্ডু বর্ণ হয়ে যায়, পাতার রং হলুদ হয়ে যায়, পাতা ঝুঁকে পড়ে। গাছে জল দিলে ম্যাগনেসিয়াম বেরিয়ে যায়। গাছে সার দেওয়ার সময় তাই অবশ্যই ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োগ করা উচিত। ঘাটতি মেটানোর জন্য ফোলিয়ার স্প্রে হিসাবে ম্যাগনেসিয়াম দেওয়া দরকার।
ক্যালসিয়াম
এটি উৎসেচককে কার্যকর করে তোলে। এটি কোষ প্রাচীরের অন্যতম উপাদান। কোষের মধ্যে জল সঞ্চালনে সহায়তা করে, কোষের বৃদ্ধি এবং কোষ বিভাজনের জন্যও এটি জরুরি। নাইট্রোজেন এবং অন্যান্য খনিজ আত্মীকরণ করার জন্য কয়েকটি উদ্ভিদে ক্যালসিয়াম না থাকলেই নয়। ক্যালসিয়াম সহজেই আলাদা হয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু উদ্ভিদ টিস্যুতে এক বার জমে গেলে ক্যালসিয়াম সেখান থেকে বেরোয় না। তাই উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে যেতে হয়। ক্যালসিয়ামের অভাবে কাণ্ড, ফুল ও শিকড়ের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়। এর অভাবে বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিকৃতি, পাতা ও ফলে কালো দাগ দেখা দেয়। পাতার ধার ঘেঁষে হলুদ রঙ দেখা দিয়ে থাকে।
Comments
Post a Comment