সার তৈরির প্রযুক্তি ও স্থান

সারে পরিণত করার প্রযুক্তি 

ছোবড়া বর্জ্যকে সারে পরিণত করার প্রযুক্তি
স্থান নির্বাচন 
ভালো সার তৈরির জন্য উপযুক্ত জায়গা বাছা অত্যন্ত জরুরি।

সারে পরিণত করার প্রযুক্তি

ছোবড়া বর্জ্যকে সারে পরিণত করার প্রযুক্তি

ছোবড়া বর্জ্য ছোবড়া শিল্প ক্ষেত্র থেকে তন্তু ছাড়া সংগ্রহ করা হয়। তন্তু থাকলে চালুনি দিয়ে তা ঝেড়ে নেওয়া হয়। না হলে সার তৈরির পর কমপোস্টের জায়গায় এগুলিকে আলাদা করতে হয়। এগুলি সারে পরিণত হয় না বরং এগুলি সার তৈরির প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে থাকে। তাই তন্তুহীন ছোবড়া বর্জ্যই সংগ্রহ করা উচিত।

স্থান নির্বাচন

সার তৈরির স্থান নির্বাচন

সার তৈরির জন্য আলাদা স্থান নির্বাচন করা জরুরি। উঁচু এলাকা হলে ভাল হয়। নারকেল গাছের মাঝে, গাছের ছায়া সারের প্রস্তুতির পক্ষে ভাল। ঢাকা এলাকায় সারের মধ্যেকার আর্দ্রতা সংরক্ষিত থাকে। সার তৈরির জমি যেন এবড়োখেবড়ো না হয়। যদি মাটির মেঝে পাওয়া যায়, তা হলে তাকে ভাল করে দুরমুশ করে, গোবর লেপে নেওয়া যেতে পারে। সারের উপাদানের ওপর ছাদ থাকলে ভাল, কারণ তাতে উপাদানগুলিকে বৃষ্টি এবং সূর্যের তেজ থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।
ছোবড়া বর্জ্য থেকে সার তৈরি একটি সবাত প্রক্রিয়া। এর জন্য গর্ত বা সিমেন্টের আধারের প্রয়োজন নেই। একে মাটির ওপরেই রাখা যায়। ছোবড়া বর্জ্যকে ৪ ফুট লম্বা এবং ৩ ফুট চওড়া আকারে রাখতে হয়। শুরুতে একে ৩ ইঞ্চি পুরু করে রেখে ভাল করে ভেজানো হয়। ভেজানোর পর নাইট্রোজেনজাত দ্রব্য মেশানো হয়। এই দ্রব্য ইউরিয়া হতে পারে বা পোল্ট্রির জঞ্জালও হতে পারে। যদি ইউরিয়া দেওয়া হয় তা হলে এক টন ছোবড়ায় ৫ কিলো ইউরিয়া দিতে হবে। এই ৫ টনকে সমান ৫ ভাগে ভাগ করতে হয় এবং ছোবড়া বর্জ্যের একটি স্তর বাদ দিয়ে আর একটি স্তরে এক কিলো করে দিতে হয়। পোল্ট্রির জঞ্জাল হলে প্রতি টন বর্জ্যে ২০০ কিলো মেশাতে হবে।
পোল্ট্রির জঞ্জাল আনুপাতিক ভাবে ভাগ করে ছোবড়া বর্জ্যের ওপর রাখা হয়। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, ১ টন ছোবড়া বর্জ্যকে ১০ ভাগ করা হলে, প্রতি স্তরে ১০০ কেজি পোল্ট্রির জঞ্জাল দিতে হবে। এর পর প্লেউরোটাস এবং টিএনএইউ বায়োমিনারেলাইজার (২%) নাইট্রোজেন উৎস হিসেবে মেশানো হয়। এর ওপর আরও এক অংশ ছোবড়া বর্জ্য রাখা হয় এবং তাকে উপরে বর্ণিত পদ্ধতিতে মিশ্রিত করা হয়। ন্যূনতম ৪ ফুট উঁচু চুড় করে পুরো উপাদান রাখা উচিত। কিন্তু ৫ ফুটের বেশি উঁচু হলে প্রস্তুতিতে যন্ত্রের প্রয়োজন হবে। সার তৈরির প্রক্রিয়ায় যে তাপ উৎপন্ন হয়, উচ্চতা বাড়লে সেই তাপমাত্রা সংরক্ষিত হয়। উচ্চতা কম হলে, যতই তাপ উৎপন্ন হোক, তা সহজেই বেরিয়ে যায়।
ভালো সার তৈরির জন্য উপযুক্ত জায়গা বাছা অত্যন্ত জরুরি।

Comments