সার তৈরি

সার তৈরির পথে

উপাদান ঝাড়াই করা 
কয়েক দিন অন্তর উপাদানের স্তূপটি ঝাড়াই করা দরকার।
আর্দ্রতা রক্ষা 
সন্তোষজনক মাত্রায় উপাদানের আর্দ্রতা বজায় রাখা জরুরি।
সারে পরিণত হওয়া 
কোন জায়গায় সার তৈরি হচ্ছে সেই ব্যাপারটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
সার সংরক্ষণ 
সার সংরক্ষণের প্রশ্নটিও খুব জরুরি।

উপাদান ঝাড়াই করা

প্রতি ১০ দিনে এক বার সারের ঝাড়াই করা দরকার, এতে স্তুপের মধ্যে জমে থাকা বাতাস বেরিয়ে যেতে পারে এবং তাজা হাওয়া ঢুকতে পারে। সার তৈরির প্রক্রিয়া একটি সবাত প্রক্রিয়া। যে সব প্রাণ সার তৈরির প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়, তাদের বিপাকীয় প্রক্রিয়া চালু রাখার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। ঝাড়াই করলে পরোক্ষ ভাবে তলটিও বায়ুপূরিত হয়। বাতাস চলাচলের আরও একটি পদ্ধতি হল সার তৈরির উপাদানগুলির মধ্যে উল্লম্ব ও অনুভূমিক ভাবে ছিদ্রযুক্ত পিভিসি বা লোহার পাইপ ঢুকিয়ে রাখা।

আর্দ্রতা রক্ষা

বর্জ্য পদার্থকে সুষম ভাবে সারে পরিণত করতে একটা সন্তোষজনক মাত্রায় আর্দ্রতা বজায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। ৬০ শতাংশ আর্দ্রতা রক্ষা করতেই হবে। সারের উপাদানগুলির ৬০ শতাংশ ভেজা থাকতেই হবে। কিন্তু বাড়তি জল বর্জ্য পদার্থ থেকে বের করে দিলে চলবে না, উপাদানগুলিকে হাতে করে নিংড়ে নিতে হবে। যদি এতে একটুও জল না বেরিয়ে আসে, তা হলে বুঝতে হবে, উপযুক্ত আর্দ্রতা বজায় রয়েছে।

সারে পরিণত হওয়া

যে তলে সার তৈরি হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে সার তৈরি হওয়ার সময়কাল। যদি উপরে বলা সমস্ত শর্ত পূরণ করা হয়, তা হলে ৬০ দিনে কমপোস্টের কিছু ভৌত বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ে। প্রথমত, বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ কমে যায়। যখন বর্জ্য কমপোস্টে পরিণত হয়ে গেলে কমপোস্টের উচ্চতা ৩০ শতাংশ কমে যায়। দ্বিতীয় লক্ষণ হল, বর্জ্য পদার্থের রং কালো হয়ে যায় এবং বর্জ্য উপাদানগুলির আকার ছোট হয়ে আসে। তৃতীয় লক্ষণ হল, সার তৈরির উপাদান থেকে মাটির গন্ধ বেরোয়। সার কতটা তৈরি হয়েছে, তার রাসায়নিক লক্ষণগুলো পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করলেই জানা যায়। রাসায়নিক লক্ষণগুলি হল, কার্বনও নাইট্রোজেনের অনুপাত কমে আসা (২০:১), অক্সিজেন নির্গমন কমে যাওয়া, জীবাণুর পরিমাণ কমে যাওয়া, পুষ্টিবিধায়ক পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।

সার সংরক্ষণ

চালুনিতে ঝেড়ে যে সার পাওয়া যায়, তা ব্যবহারের উপযুক্ত। যদি সার তখনই না ব্যবহার করা হয়, তা হলে আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য সেটাকে খোলা, ঠান্ডা জায়গায় রাখতে হবে, যাতে সারে উপস্থিত উপকারী জীবাণুগুলো না মরে যায়। আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য মাসে এক বার সারের ওপর জল ছড়াতে হবে।


Comments